১৫ আগষ্টের ভাষণ বক্তব্য বক্তৃতা ২০২৪ || বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষীকী ২০২৪ ||

মাননীয় প্রধান অতিথি, সন্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকগণ, এবং আমার প্রিয় সহপাঠীরা,
আজকের দিনটি আমাদের জাতির ইতিহাসে এক গভীর শোকের দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, এই দিনে আমরা হারিয়েছিলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে আমরা হারিয়েছি আরও অনেককে, যারা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য এবং তাঁর কাছের মানুষ ছিলেন। এই দিনটি আমাদের জন্য এক অবর্ণনীয় বেদনার দিন, যা আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক। তাঁর নেতৃত্বে এবং দিকনির্দেশনায় আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। তাঁর অসীম ত্যাগ, সংগ্রাম এবং সাহসিকতার জন্যই আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তাঁর “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” এই আহ্বান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রেরণা হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের এই শোকাবহ দিনে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। শুধু তাঁকেই নয়, তাঁর পরিবারের অনেক সদস্যকেও সেই রাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর স্ত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তাঁর তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শিশু শেখ রাসেল, তাঁর দুই পুত্রবধূ, এবং আরও অনেককে হত্যা করা হয়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড আমাদের জাতির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।
আজকের এই দিনে আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এবং তাঁর আদর্শ ও মূল্যের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনঃস্থাপন করতে এখানে একত্রিত হয়েছি। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে এবং তাঁর আদর্শকে অনুসরণ করে চলতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তাঁর অনুপ্রেরণায় আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং দেশপ্রেমকে জাগ্রত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং শান্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আমাদের এই শোক দিবসে আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে, তাঁর দেখানো পথে চলবো। আমাদের দায়িত্ব হল দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং শান্তি নিশ্চিত করা।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ। তাঁর দেখানো পথে আমরা যদি চলি, তাহলে আমরা সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবো। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত তাঁর আদর্শকে বুকে ধারণ করে, আমাদের কাজের মাধ্যমে দেশের প্রতি আমাদের ভালবাসা প্রকাশ করা।
চলুন, আমরা সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।
জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!
ধন্যবাদ।

কবিতা
কফিন কাহিনী
–মহাদেব সাহাচারজন দেবদূত এসে ঘিরে আছে একটি কফিন
একজন বললো দেখো ভিতরে রঙিন
রক্তমাখা জামা ছিলো হয়ে গেছে ফুল
চোখ দুটি মেঘে মেঘে ব্যথিত বকুল!চারজন দেবদূত এসে ঘিরে আছে এক শবদেহ
একজন বললো দেখো ভিতরে সন্দেহ
যেমন মানুষ ছিলো মানুষটি নাইমাটির মানচিত্র হয়ে ফুটে আছে তাই!
চারজন দেবদূত এসে ঘিরে আছে একটি শরীর
একজন বললো দেখো ভিতরে কী স্থির
মৃত নয়, দেহ নয়, দেশ শুয়ে আছেসমস্ত নদীর উৎস হৃদয়ের কাছে!
চারজন দেবদূত এসে ঘিরে আছে একটি কফিন
একজন বললো দেখো ভিতরে নবীন
হাতের আঙুলগুলি আরক্ত কবরী
রক্তমাখা বুক জুড়ে স্বদেশের ছবি!