বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নমুনা বক্তব্য
بسم الله الرحمن الرحيم
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (১লা সেপ্টেম্বর) উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই মহাসমাবেশে উপস্থিত আছেন আমাদের সম্মানিত নেতৃবৃন্দ, সাহসী সংগঠকরা, তরুণ-যুব কর্মীরা এবং গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশী জনগণের প্রতিনিধি।
আজকের এই মহতি দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি—
১। আমাদের মহান প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে, যিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।
২। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে, যিনি তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ইতিহাস গড়েছেন।
৩। তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমানকে, যিনি আজ বিদেশ থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
৪। এবং সেইসব অকুতোভয় নেতাকর্মী, যারা গণতন্ত্রের আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন, কিংবা এখনো নির্যাতিত হচ্ছেন।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
প্রিয় সহযোদ্ধারা,
১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর শহীদ জিয়া যখন বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন, তখন বাংলাদেশের মানুষ ছিল এক রাজনৈতিক সঙ্কটে। জনগণ চেয়েছিল বিকল্প নেতৃত্ব, একটি শক্তি যা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে এবং জনগণকে ক্ষমতায়িত করবে।
শহীদ জিয়া তখন ঘোষণা করেছিলেন—
“বাংলাদেশের মালিক জনগণ, আর আমি সেই জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে চাই।”
এই দর্শন থেকেই বিএনপি-র জন্ম। বিএনপির জন্ম মানে হলো—
- গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম,
- জনগণের শক্তির পুনঃপ্রতিষ্ঠা,
- স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার।
সমসাময়িক প্রেক্ষাপট
কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজকের বাংলাদেশ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে?
= একদিকে চলছে ভয়ঙ্কর গণতন্ত্রহীনতা—দেশে আর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। জনগণ ভোট দিতে পারে না।
* অন্যদিকে চলছে রাজনৈতিক দমন–পীড়ন—হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী, প্রতিদিন গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
👉 দেশের অর্থনীতি আজ গভীর সঙ্কটে—
- টাকা প্রতিদিন অবমূল্যায়িত হচ্ছে,
- দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা,
- গরিব আরও গরিব হচ্ছে, ধনী আরও ধনী হচ্ছে।
👉 যুবসমাজ আজ হতাশ—তারা কাজ পাচ্ছে না, পাচ্ছে না স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার।
এখন প্রশ্ন হলো—এই দুঃসময়ে কে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে?
উত্তর একটাই—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা
প্রিয় সহযোদ্ধারা,
আজকের দিনে আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই—আমাদের দায়িত্ব অনেক বড়।
১। আমরা শুধু একটি রাজনৈতিক দল নই, আমরা গণতন্ত্রের শেষ আশ্রয়স্থল।
২। আমাদের লড়াই শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াই নয়, আমাদের লড়াই হচ্ছে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই, মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াই।
৩। আমাদের লড়াই হচ্ছে শহীদ জিয়ার স্বপ্ন পূরণের লড়াই।
উদ্দীপনামূলক প্রশ্ন
আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করি—
১। আমরা কি রাজপথে সেই অধিকার আদায়ের জন্য প্রস্তুত?
২। আমরা কি গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত?
৩। আমরা কি শহীদ জিয়ার আদর্শ রক্ষা করতে বুকের রক্ত ঢেলে দিতেও প্রস্তুত?
(বিরতি নিন, শ্রোতাদের স্লোগান দিতে উৎসাহ দিন)
.১। গণতন্ত্র মুক্তি পাক!
২। বাংলাদেশের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দাও!
৩। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্য গড়ে তোলো!
প্রতিজ্ঞা
প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা শপথ করি—
- আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শকে আঁকড়ে ধরব।
- দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন চালাব।
- আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ব।
- আমরা দমন–পীড়নে ভীত হব না, মামলা–হামলায় পিছপা হব না।
- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।
সমাপ্তি
প্রিয় সহযোদ্ধারা,
বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে—যখন মানুষ হতাশ ছিল, তখন বিএনপি-ই তাদের আশা জুগিয়েছে।
আজও সেই আশা জাগানোর দায়িত্ব আমাদের।
তাহলে আসুন একসাথে বলি—
১। বাংলাদেশের মালিক জনগণ!
২। আমরা সেই মালিকের অধিকার ফিরিয়ে আনব!
৩। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব—ইনশাআল্লাহ!
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জিন্দাবাদ
ধন্যবাদ।
Bangladesh jatiotabadi chatradal

FAQ ও উত্তর
1. বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কবে পালিত হয়?
বিএনপি প্রতি বছর ১লা সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে।
2. বিএনপি কে প্রতিষ্ঠা করেন?
১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।
3. বিএনপির মূলনীতি কী কী?
বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, উন্নয়ন এবং জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা।
4. শহীদ জিয়ার বিখ্যাত উক্তি কী?
তিনি বলেছিলেন—“রাজনীতি মানে জনগণের কল্যাণ।”
5. বিএনপিকে কেন জনগণের দল বলা হয়?
কারণ কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বিএনপিকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে গ্রহণ করেছে।
6. বিএনপির উন্নয়নমূলক অবদান কী কী?
অবকাঠামো, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, কৃষি, যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
7. আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির ভূমিকা কী?
বিএনপি বর্তমানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার আন্দোলন করছে।
8. বিএনপি কেন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত?
কারণ বিএনপি সবসময় স্বৈরাচার ও একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
9. তারেক রহমানের বর্তমান ভূমিকা কী?
তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
10. তরুণ প্রজন্মের প্রতি বিএনপির বার্তা কী?
তাদের দায়িত্ব হলো স্বাধীনতাকে মূল্য দেওয়া, গণতন্ত্র রক্ষা করা এবং শহীদ জিয়ার আদর্শে দেশকে ভালোবাসা।
11. খালেদা জিয়ার ভূমিকা কী ছিল?
বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ পরিচালনা করেছেন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
12. বিএনপির সংগ্রামের ইতিহাস কেমন?
বিএনপি সবসময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং এর নেতাকর্মীরা কারাবরণ ও নির্যাতন সহ্য করেছে।
13. বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান কী?
বিএনপি মনে করে দুর্নীতি, লুটপাট ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক নীতির কারণে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে।
14. বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কী করবে?
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, দুর্নীতি দমন এবং অর্থনীতি পুনর্গঠন করবে।
15. শহীদ জিয়ার উত্তরাধিকার কে বহন করছেন?
প্রথমে বেগম খালেদা জিয়া এবং বর্তমানে তারেক রহমান শহীদ জিয়ার উত্তরাধিকার বহন করছেন।
16. কেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী গুরুত্বপূর্ণ?
এটি কেবল ঐতিহাসিক দিন নয়, বরং গণতন্ত্র রক্ষা ও জাতীয় ঐক্যের শপথের দিন।
17. বিএনপির ঐক্যের ডাক বলতে কী বোঝায়?
সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে শক্তিশালী করা।
18. জিয়াউর রহমান কোন নীতির ভিত্তিতে দল গড়েন?
বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা রক্ষা ও জনগণের কল্যাণকে ভিত্তি করে তিনি বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।
19. তরুণদের জন্য বিএনপির অনুপ্রেরণা কী?
শহীদ জিয়ার দেশপ্রেম, খালেদা জিয়ার সংগ্রাম ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব তরুণদের অনুপ্রেরণা।
20. বিএনপি ভবিষ্যতে কী লক্ষ্য অর্জন করতে চায়?
একটি স্বাধীন, স্বনির্ভর, গণতান্ত্রিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।