প্রিয় পাঠক শুভেচ্ছা নিন। ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান যেভাবে উপস্থাপনা করবেন তার নির্দেশনা ও একটি নমুনা স্ক্রিপ্ট নিয়ে এই ব্লগে আলোচনা করছি আমি ময়নুল ইসলাম শাহ্‌

২১শে ফেব্রুয়ারি ইভেন্টের ধারাবাহিকতা বা সিকোয়েন্স

  • ক)অতিথিবৃন্দের আগমন ঘোষণা
  • খ) মঞ্চে আসন গ্রহণ
  • গ) ফুলের তোড়া বুকে প্রদান
  • ঘ) অনুষ্ঠান শুরু করার অনুমতি
  • ঙ) দিবসের ভূমিকা ও প্রাসঙ্গিক কবিতাংশ পাঠ (শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন)
  • চ) ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও তর্জমা
  • ছ) বক্তব্যের সিকোয়েন্স তৈরি
  • জ) পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ঘোষণা
  • ঝ) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা
  • ঞ) সমাপ্তি ঘোষণা

ক। প্রধান অতিথির আগমনের ঘোষণাঃ

নমুনাঃ সম্মানিত সুধী, এইমাত্র আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছেন, আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনাব, …… সাথে আছেন………সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি।

খ। মঞ্চে আসন গ্রহণ

নমুনাঃ এখন, আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতিকে উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও অন্যান্য সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে সাথে নিয়ে মঞ্চে এসে আসন গ্রহন করার জন্য অনুরোধ করছি ।

গ। ফুলের বুকে/তোড়া প্রদান

নমুনাঃ প্রিয় সুধী, ১।এখন আমন্ত্রিত অতিথি জনাব ……কে ফুলের তোড়া প্রদান করবে……… ২। ……… ৩। ………


Best Quality more Smart Watch Here


ঘ। অনুষ্ঠান শুরুর অনুমতি গ্রহণ  

নমুনাঃ এখন, আজকের অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব, ……এর কাছে সদয় অনুমতি প্রার্থনা করছি । ধন্যবাদ, আপনাকে।

ভিডিওতে দেখুন- ekushe February uposthapona script

ঙ। দিবসের ভূমিকা ও প্রাসঙ্গিক কবিতা

নমুনাঃ আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি, বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্যবাহী দিন। বাঙালির জাতিসত্ত্বার চেতনার উৎস হচ্ছে এ দিনটি। বাংলা ভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার ঐতিহাসিক দিন আজ। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আমরা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করি। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আর শুধু আমাদের মাতৃভাষা দিবস নয়। প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে।

আজ আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বায়ান্নর সকল ভাষাশহিদকে, যারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাজপথে নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। কবিতা-

এখানে যারা প্রাণ দিয়েছে/ রমনার উর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার তলায়
যেখানে আগুনের ফুলকির মতো/এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি। /আজ আমি শোকে বিহ্বল নই
আজ আমি ক্রোধে উন্মত্ত নই/ আজ আমি প্রতিজ্ঞায় অবিচল

ঘোষণাঃ

………….স্কুল/কলেজ/প্রতিষ্ঠান আয়োজিত আজকের এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও জাতীয় শহিদ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি। আজকের অনুষ্ঠানটিকে আমরা তিনটি পর্বে ভাগ করেছি; ১ম পর্বে থাকবে আজকের দিবসটি নিয়ে আলোচনা, ২য় পর্বে পুরস্কার বিতরণী এবং ৩য় পর্বে থাকবে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় আছি আমি ময়নুল ইসলাম শাহ্‌।

চ। ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও তর্জমাঃ

নমুনাঃ অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত ও তর্জমা করার জন্য মঞ্চে আহবান করছি জনাব………কে । ধন্যবাদ জনাব ……… (এভাবে পবিত্র গীতা, পবিত্র ত্রিপিটক পাঠ ও তর্জমা)

ছ। বক্তব্যের সিকোয়েন্স- ১

নমুনাঃ (শিক্ষার্থীর মধ্যে ২/১ জন) ২১শের চেতনা যেন আমাদের কোটি প্রাণের স্পন্দন। প্রিয় সুধী, মহান ভাষা আন্দোলন নিয়ে কিশোর-যুবাদেরও রয়েছে প্রগাঢ় অনুভূতি। এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও জাতীয় শহিদ  দিবসে নিজের প্রত্যাশা ও অনুভূতি উপস্থাপন করবে………

ধন্যবাদ…কে, তার চমৎকার বক্তব্যের জন্য। এর ফাঁকে ফাঁকে কিছু প্রাসঙ্গিক কবিতার লাইন বলতে পারেন

ছ। বক্তব্যের সিকোয়েন্স- ২

এরপর সম্মানিত শিক্ষকদের মধ্যে ২/৩ জনের বক্তব্য)  

যেমনঃ এবার ……বিভাগের অধ্যাপক জনাব ……কে আজকের দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ করছি।

ধন্যবাদ…স্যারকে তাঁর তথ্যসমৃদ্ধ বক্তব্যের জন্য। (এভাবে ২/৩ জন শিক্ষক)।

ছ। বক্তব্যের সিকোয়েন্স – ৩ (এরপর সভাপতির বক্তব্য)    

নমুনাঃ এবার বক্তব্য প্রদান করার জন্য প্রতিষ্ঠানের সভাপতি/ অধ্যক্ষ জনাব ……কে শহিদ দিবসের গুরুত্ব নিয়ে তাঁর মুল্যবান অভিমত ব্যক্ত করার জন্য অনুরোধ করছি।

ধন্যবাদ সভাপতি/অধ্যক্ষ মহোদয়কে তাঁর  অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যের জন্য।

জ। পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা-   

ঘোষণাঃ সম্মানিত সুধী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আমরা রচনা, চিত্রাংকন, ভাষণ, আবৃত্তি এবং কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম । এসব ইভেন্টে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেছিলো। এখন ………………… স্কুল আয়োজিত এসকল প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের পালা

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার জন্য অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে অনুরোধ করছি।

(তালিকা দেখে একে একে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করতে হবে)

ঝ। সংক্ষিপ্ত সংস্কৃতিক পরিবেশনা। 

ঘোষণাঃ প্রিয় সুধী, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই আজকের অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শুরু করবো। এই অনুষ্ঠানে থাকছে সংগীত পরিবেশনা, কবিতা আবৃতি, নৃত্য, নাটিকা ইত্যাদি। আমরা এসব পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বায়ান্নর মহান ভাষা-শহিদগণের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবো। এখন, মঞ্চ প্রস্তুত করার জন্য আপনাদের কাছে কিছু সময় চেয়ে নিচ্ছি।

গান- প্রথমেই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে সেই বিখ্যাত সংগীত “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো” গানটি সমবেত কন্ঠে পরিবেশন করবে ……

কবিতা- মাগো ওরা বলে, কবি- ——— আবৃত্তি করার জন্য মঞ্চে আসবে———–

ছড়া- একুশের কবিতা, কবি- ——— আবৃত্তি করার জন্য মঞ্চে আসবে———–

নৃত্য- ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়। পরিবেশন করবে——————————-

ঞ। সমাপ্তি ঘোষণাঃ  

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব অনুধাবন করে আমরা বিশ্ব ভ্রাতৃত্ববোধ আরো সম্প্রসারিত করতে সক্ষম হব। বাংলাভাষী জনগণকে জ্ঞানের সব স্তরে বাংলা ভাষার প্রয়োগ বৃদ্ধিতে সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। একুশের চেতনাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে প্রতিটি বাঙালিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলা ভাষার সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিশ্বপরিচয়ে বাঙালি হয়ে উঠবে অনন্য এক শক্তিশালী জাতি। এই কামনায় শেষ করছি। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলাম আমি    -ময়নুল ইসলাম শাহ্‌।

একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা ইতিহাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *