স্কুল বা কলেজের অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের বক্তৃতা দিতে হলে নির্দিষ্ট কিছু কৌশল অনুসরণ করা জরুরি, যাতে তাদের বক্তব্য প্রভাবশালী ও শ্রোতাদের কাছে বোধগম্য হয়। নিচে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু কৌশল ও একটি নমুনা বক্তব্য দেওয়া হলো:


১. বিষয়ের উপর ভালো ধারণা রাখা

বক্তব্যের বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়ে তারপর প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। বিষয়টি যদি ‘স্বাধীনতা দিবস’ হয়, তবে স্বাধীনতার ইতিহাস ও এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে হবে।

২. সংক্ষিপ্ত ভূমিকা ও প্রাসঙ্গিক শুরু

বক্তব্যটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু আকর্ষণীয় ভূমিকা দিয়ে শুরু করুন। শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন বা বক্তব্য দিতে পারেন।

৩. মূল বক্তব্যে সরল ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহার

প্রধান অংশে বক্তব্যের বিষয়বস্তু সহজ ভাষায় উপস্থাপন করুন। এতে শ্রোতারা সহজেই বিষয়টি বুঝতে পারবেন এবং সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন।

৪. উদাহরণ ও প্রাসঙ্গিক ঘটনা সংযোজন

বক্তব্যকে আরও বাস্তবসম্মত করতে কয়েকটি উদাহরণ বা প্রাসঙ্গিক ঘটনার উল্লেখ করুন। এতে বক্তব্যের গুরুত্ব আরও বেশি হয়ে ওঠে।

৫. উপসংহারে অনুপ্রেরণামূলক বার্তা দিন

বক্তব্যের শেষে এমন কিছু বলুন যা শ্রোতাদের অনুপ্রাণিত করবে। একে সংক্ষিপ্ত রেখে বক্তব্য শেষ করতে পারেন।

৬. প্র্যাকটিস ও আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা

বারবার প্র্যাকটিসের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন এবং বক্তব্য দেয়ার সময় শ্রোতাদের সাথে চোখের যোগাযোগ রাখুন।


শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বক্তৃতার উদাহরণ

বিষয়: স্বাধীনতা দিবস


বক্তৃতার সারমর্ম

উপরের উদাহরণটি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা বিশেষ দিবসে সহজেই একটি আকর্ষণীয় সেরা বক্তব্য তৈরি করতে পারে।

শিক্ষার্থীর ভাষণ প্রস্তুতি- ময়নুল ইসলাম শাহ্‌
শিক্ষার্থীর ভাষণ প্রস্তুতি- ময়নুল ইসলাম শাহ্‌

FAQ: শিক্ষার্থীদের বক্তৃতা সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা

  1. স্কুল বা কলেজের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত?
    শিক্ষার্থীদের উচিত বক্তব্যের মূল বিষয়ের ওপর গবেষণা করা, সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় বক্তব্য প্রস্তুত করা এবং আত্মবিশ্বাসী থাকার জন্য বারবার প্র্যাকটিস করা।
  2. বক্তব্য কতটুকু দীর্ঘ হওয়া উচিত?
    একটি শিক্ষার্থীর বক্তব্য ৫-৭ মিনিটের মধ্যে রাখা ভালো, যাতে এটি সংক্ষিপ্ত, আকর্ষণীয় এবং শ্রোতাদের জন্য সহজবোধ্য হয়।
  3. ভূমিকা বা শুরুটা কেমন হওয়া উচিত?
    বক্তব্যের শুরুতে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন, ছোট গল্প বা কোনো উদ্ধৃতি দিয়ে শুরু করা ভালো, যা শ্রোতাদের আকর্ষণ করবে।
  4. কিভাবে বক্তব্যকে আরও প্রভাবশালী করা যায়?
    বক্তব্যে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ, ঘটনা, এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার উল্লেখ করলে এটি আরও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে।
  5. বক্তৃতার ভাষা কেমন হওয়া উচিত?
    ভাষা সহজ এবং শ্রোতাদের জন্য বোধগম্য হওয়া উচিত, যেন শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শ্রোতাদের কাছে পৌঁছায়।
  6. শিক্ষার্থীরা কীভাবে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে পারে?
    বারবার প্র্যাকটিসের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়। এতে বক্তব্য দেওয়ার সময় নার্ভাসনেস কমে যায় এবং সাবলীলভাবে বক্তব্য দিতে পারা যায়।
  7. উপসংহার কেমন হওয়া উচিত?
    বক্তব্যের শেষ অংশে একটি অনুপ্রেরণামূলক বার্তা দিতে পারেন। এটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু প্রভাবশালী হওয়া উচিত।
  8. বক্তৃতার সময় বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কেমন হওয়া উচিত?
    বক্তৃতার সময় হাতের ব্যবহার স্বাভাবিক রাখুন এবং চোখের যোগাযোগ বজায় রাখুন।
  9. কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বক্তৃতার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়?
    নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর যথেষ্ট গবেষণা করুন, প্রাসঙ্গিক পয়েন্টগুলো লিপিবদ্ধ করুন এবং এর ওপর ভিত্তি করে বক্তব্য তৈরি করুন।
  10. বক্তৃতায় কেন উদাহরণ ও তথ্য দেওয়া প্রয়োজন?
    উদাহরণ ও তথ্য বক্তব্যকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে এবং শ্রোতাদের কাছে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন-কিভাবে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন: ধাপে ধাপে গাইড [ নমুনা স্ক্রীপ্টসহ ]

2 thought on “স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বক্তব্য বা ভাষণ দেওয়ার কৌশল”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *