তোমার স্কুলে/কলেজে ‘বাংলা নববর্ষ’ বা ‘পহেলা বৈশাখ’ উদযাপন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
১৬ই এপ্রিল, ২০২৪
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
শহীদ জাহাঙ্গীর উচ্চ বিদ্যালয়
দোহা, ঢাকা।
বিষয়: পহেলা বৈশাখ উদযাপন সম্পর্কে প্রতিবেদন।
জনাব,
সম্প্রতি শহীদ জাহাঙ্গীর উচ্চ বিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন সম্পর্কে আদেশপাপ্ত হয়ে নিম্নলিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছি।
উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
পহেলা বৈশাখ বাঙালির কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। প্রতিবছর এ দিনটি আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয় উৎসবমুখর পরিবেশে।
শহীদ জাহাঙ্গীর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ বছরও বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে। নববর্ষের দিন সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে অংশগ্রহণ করে এবং বৈশাখী গানের সুরে মুখরিত হয় পরিবেশ।
র্যালি শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পান্তা ভাত এবং ইলিশ মাছসহ নানা ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন করা হয়। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল হালিম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলা বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক জনাবা রুবিনা আক্তার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমবেত কণ্ঠে “এসো হে বৈশাখ” গানটি পরিবেশন করে। এরপর একে একে নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, নাটিকা এবং কৌতুক পরিবেশিত হয়। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা ছিল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর, যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্বে বিদ্যালয়ের মাঠে বিভিন্ন স্টল স্থাপন করা হয়। এসব স্টলে গ্রামীণ ঐতিহ্যের পণ্য প্রদর্শিত হয়, যা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও দারুণ আকর্ষণ করে। প্রধান অতিথি ও সম্মানিত অতিথিরা প্রতিটি স্টল ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করেন।
দিনব্যাপী এই আনন্দমুখর অনুষ্ঠান দুপুর ২টায় সমাপ্ত হয়। এ অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। পহেলা বৈশাখের এই আয়োজন সকলের জন্য একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।
নিবেদক
তামান্না রহমান
অষ্টম শ্রেণি
রোল নং- ১২
Mibro_X1_Amoled_HD_Sports_Smart_Watch_Wi-Mibro-cddd3-233806
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য
১. পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন।
২. এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম প্রধান উৎসব।
৩. পহেলা বৈশাখ প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল উদ্যাপিত হয়।
৪. এদিন সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়, যা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।
৫. পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ খাওয়া পহেলা বৈশাখের বিশেষ আকর্ষণ।
৬. ব্যবসায়ীরা নতুন হালখাতা খুলে ক্রেতাদের মিষ্টি খাওয়ান।
৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট এদিন বিশেষ আয়োজন করে।
৮. গ্রাম-গঞ্জে মেলা বসে, যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতির নানা উপকরণ পাওয়া যায়।
৯. পহেলা বৈশাখে সবাই নতুন পোশাক পরিধান করে এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করে।
১০. এই উৎসব বাঙালির ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একত্রিত করে।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করার নিয়ম ও অনুষ্ঠান উপস্থাপনার নমুনা স্ক্রিপ্ট
FAQs (প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন ১: পহেলা বৈশাখ কী?
উত্তর: পহেলা বৈশাখ হলো বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন, যা বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম প্রধান উৎসব।
প্রশ্ন ২: পহেলা বৈশাখ কবে উদ্যাপিত হয়?
উত্তর: পহেলা বৈশাখ প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল উদ্যাপিত হয়।
প্রশ্ন ৩: পহেলা বৈশাখের প্রধান আকর্ষণ কী?
উত্তর: পহেলা বৈশাখের প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা এবং পান্তা-ইলিশ ভোজন।
প্রশ্ন ৪: মঙ্গল শোভাযাত্রা কী?
উত্তর: মঙ্গল শোভাযাত্রা হলো একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা যা পহেলা বৈশাখের সকালে আয়োজন করা হয়। এটি বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক।
প্রশ্ন ৫: পান্তা ভাত কেন খাওয়া হয়?
উত্তর: পান্তা ভাত ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা গ্রামের কৃষকরা একসময় সকালে খেতেন। এটি পহেলা বৈশাখে ঐতিহ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৬: হালখাতা কী?
উত্তর: হালখাতা হলো ব্যবসায়িক হিসাব খোলার নতুন খাতা, যা পহেলা বৈশাখে নতুন বছর উপলক্ষে খোলা হয়।
প্রশ্ন ৭: পহেলা বৈশাখের পোশাক কী?
উত্তর: সাধারণত লাল-সাদা পোশাক পহেলা বৈশাখে জনপ্রিয়। নারীরা শাড়ি এবং পুরুষরা পাঞ্জাবি পরে থাকেন।
প্রশ্ন ৮: পহেলা বৈশাখের ইতিহাস কী?
উত্তর: পহেলা বৈশাখের ইতিহাস মুঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে শুরু হয়। তখন এটি কৃষিকর আদায়ের জন্য ব্যবহৃত হতো।
প্রশ্ন ৯: পহেলা বৈশাখ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: এটি বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এটি সবাইকে একত্রিত করে।
প্রশ্ন ১০: পহেলা বৈশাখ কীভাবে উদ্যাপন করা হয়?
উত্তর: পহেলা বৈশাখ উদ্যাপনে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পান্তা ভাত খাওয়ার আয়োজন করা হয়।